এভাবে লেখা-লেখির আঙিনায় চলে আসব কখনাে ভাবিনি। ছােটবেলা থেকে এমন কোনাে ইচ্ছা বা প্রচেষ্টাও ছিলো না আমার মধ্যে।অকপটেই স্বীকার করছি নিজের কমতি গুলোর কথা।কারণ অন্যায়ের সাথে কোনো আপোষ নেই আমার।আমার বেড়ে উঠা ভালাে কোনো পরিবেশ অথবা শিক্ষিত কোনো দীনদার পরিবারে নয় বরং গ্রামাঞ্চলের আর দশটি সাধারণ জন পরিবারের মতােই দীনহীন ও মধ্যবিত্তের চত্ত্বরে বেড়ে উঠা।ছোট থেকেই বেড়ে উঠেছি নানান মুখী সংকটের মধ্য দিয়ে লড়াই করে।পড়াশােনার পাশাপাশি নিজে বয়সন্ধির চেয়েও বড় বড় দায়িত্ব মাথায় নিয়ে গড়ে উঠেছি,এক চিন্তাশীল নাবিকের মতো!

আমার মনে হয়,প্রতিটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানরাই লড়াকু হয়।তারা বোধহয় জন্মায়ই আজন্ম বিপ্লবী হয়ে সংগ্রাম করতে।সমস্যা তাদের একমাত্র সঙ্গী বলা যায়। এ পৃথিবীতে বেশিরভাগ মানুষকে যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয় তার নাম দরিদ্র আর যাদের বেশি লড়াই করতে হয় তার নাম মধ্যবিত্ত!

এমন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের জন্য কলম কষে খাতা নিয়ে সারাক্ষণ বসে জ্ঞান বিলিন করা বিলাসিতা ছাড়া আর কী! জীবনের নানান রোমান্সকে পিছে ফেলে যখন এগিয়ে চলে তাদের বেঁচে থাকার লড়ায় সেখানে আবার লেখক হওয়ার স্বপ্ন দেখা সে তো কেবল বামন হয়ে চাঁদে হাত বাড়ানোর মতো অবাস্তব! কিন্তু আল্লাহ সুবানাহু ওতায়ালা কোনো কিছুরই মুখাপেক্ষী নন।তিনি যা ভালো মনে করেন তাই হয়।আর তিনি চাইলেন বলেই এক কাঁচা আনাড়ির হাতের দরুন কিছু শব্দ পুঞ্জ গেঁথে সাজিয়ে দিলেন হয়ে গেলো কবিতা,সাথে আরো লিখি কতো ছবিতা…পবিত্র মহান রব ও সত্ত্বার এহসানেই আমি এক সামান্য লেখিকা হিসেবে আপনাদের সামনে।তবে সামর্থ্যের কাছে আমি আজও শূন্য! যতদিন আল্লাহ সুবানাহু ওতায়ালা না চান ঠিক ততোদিন সামনে অগ্রসর হওয়া সম্ভব নয়! তবে প্রচেষ্টা অব্যাহত।ঠুনকো এ হাতের ছোয়ায় যখন কিছু বাক-বাকুলতায় প্রাণ ফিরে আসে তখন না হয় নিজ আঙিনায় বসে তা একটু পড়ে দেখবেন!লেখকদের স্বপ্ন সেতো সজীবতায় হাসুক সাহিত্যে আঙিনা ব্যাস এ টুকুই।

আর যা দিশেহারা জীবনে অস্পষ্টটার ছাপ নিয়ে ঘুরপাক খাচ্ছেন তাদের বলবো তাকওয়া অবলম্বন করুন।কোনো কিছুই আপনার অধিনে না বরং রবের পক্ষ থেকে শুরু হয়ে তার কাছেই ফিরে যায় সবে,সামান্য কিছুটা সময়ের ব্যবধান মাত্র! দোয়া করুন তা আপনার ভাগ্যকে পরিবর্তন করার একমাত্র হাতিয়ার।পরিশেষে সামান্য এই লেখকের জন্য সবাই দোয়া করবেন একদিন সফল হয়ে ব্যর্থতার গল্প গুলো যেনো সবার সামনে তুলে ধরতে পারি।আর হ্যাঁ আরেকটা কথা যা আমি খুব করে বিশ্বাস করি,এই পৃথিবীতে সেই বেঁচে থাকতে পারে যে সব কিছুর সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে যানে,আমিও তাই করছি।

বাঁধাগ্রস্ত হয়ে হাল ছেড়ে দেয়া,আত্নহত্যা করাতো নিচু লোকের পরিচয়! এখনো আমি রঙ মিশিয়ে ভাবি,আশার প্রদীপ জ্বালায়,স্বপ্নকুঁড়ি ফোটার অপেক্ষায় অপেক্ষমাণ৷ এক নাবিক।চোখের সামনে এলো মেলো কতো ইস্পিত স্বপ্ন তবে বিশ্বাস করি এগুলোই আমাকে একদিন আমার লক্ষ্যে পৌঁছে দেবে ইন শা আল্লাহ।পরিশ্রমের বিনিময়ে রোজগার করাটাই এখন সাধ,আশা, স্বপ্ন।আর মা শিখিয়েছেন তুমি নারী মানেই সংগ্রামী,নিজের স্বপ্ন পূরণের পথে না নামলে একদিন অন্যের স্বপ্ন পূরণ করতে করতে জীবন শেষ করে দেবে! আরে জীবনে বাবার অনেক টাকা থাকলে তো কেবল শুধু সুখী হওয়া যায় কিন্তু জীবনে শ্রম দিয়ে কঠিনতম পরিস্থিতিকে টিকে থাকলে জীবনে সফল হওয়া যায়।তুমি মেয়ে হয়ে জন্মেছো এটা কারো কাছে গর্বের আবার কারো কাছে এই বিষয়টা লজ্জার! তুমি কোন উপাত্তে থাকতে চাও এটা নিতান্তই তোমার উপর ডিপেন্ড করে।আমি মনে করি,স্বপ্ন একটা প্রতিভা আর পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মানুষের এই স্বপ্ন দেখার, প্রতিভা বিকাশের অধিকার রয়েছে সৃষ্টিগত ভাবে।

জীবনে উত্থান-পতন ছাড়া সব কিছুই নিজের মতো হলে তা আবার জীবন কিসের!
জীবনে সফলতা পাওয়া খুব সহজ না; এটি পরিশ্রম ছাড়া শুধু দোয়াতে পাওয়া যায় না,আবার পাওয়ার সময় হলে কারো বদ-দোয়ায় আঁটকেও থাকেনা,পরিশ্রম করো সফলতা আসবেই ইন শা আল্লাহ।

কবি, লেখিকা, সম্পাদক ও সাংবাদিক

তাহেরা আক্তার,

টংগী গাজীপুর।